লিড জেনারেশনলিড জেনারেশন মার্কেটিং কী? (১ম পর্ব)

 

লিড জেনারেশন মার্কেটিং কী?

লিড জেনারেশন

লিড সংগ্রহ করতে হলে একটি লিড জেনারেশন ফানেল লাগে, বায়ারের সাথে ভালো যোগাযোগ রক্ষা করা লাগে, এবং ভালো মানের কন্টেন্ট লাগে। এতটুকু বেসিক আমাদের সকলের জানা আছে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে- অডিয়েন্সের কাছে কিভাবে পৌঁছাতে পারবো? 

ল্যান্ডিং পেইজ বা ওয়েবপেইজের মাধ্যমে যে ধরণের লিড সংগ্রহ করা হয়, এই ধরণের লিডে অডিয়েন্সের মতামত থাকে। যেমন ল্যান্ডিং পেইজে যে সকল লিড জমা পড়ে সব কিন্তু অডিয়েন্সের অনুমতি সাপেক্ষে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ন, কারণ উন্নত বিশ্বের মানুষ মেইল কে অনেক প্রায়োরিটি দিয়ে থাকে। যখন ভিন্ন সোর্স থেকে মেইল এসে মার্কেটিং করে যায় তাদের ইনবক্সে, তখন তারা বিষয়টিকে সহজ ভাবে নেয় না। ফলাফল হিসেবে, ঐ ধরনের সোর্স বিহীন মার্কেটিং মেসেজ গুলোর স্থান হয় স্প্যাম বক্সে। এক্ষেত্রে লিগ্যাল ওয়েতে লিড সংগ্রহ করে মার্কেটিং করা সবচেয়ে ভালো উপায়। 

ভালো মানের কন্টেন্ট শেয়ারের মাধ্যমে, বিশাল ছাড়ের অফারের মাধ্যমে, এবং নিয়মিত রিডারের মাধ্যমে যে সকল লিড পাওয়া যায় সেগুলো তাদের অনুমতিতেই পাওয়া যায়। পরে আপনার লিড থেকে মেসেজ গেলেও তারা বিষয়টিকে সহজ ভাবে দেখবে। 

কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, কিভাবে অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানো যায়? হ্যাঁ, আজকে আমরা দেখবো তিনটি ভিন্ন ভিন্ন পন্থা, যা দিয়ে আপনার টার্গেটেড পেইজে ট্রাফিক নিয়ে আসতে পারবেন এবং লিড জেনারেশন ফানেলের মধ্য দিয়ে নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। 

লিড জেনারেশন মার্কেটিং কত প্রকার?

লিড জেনারেশন মার্কেটিং তিন ভাবে করা যায়, যা আপনার লিড জেনারেশন ফানেলে সর্বোচ্চ সংখ্যক ট্রাফিক পাঠাতে সক্ষম। যেমন-

  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
  • লিংকড-ইন এডভার্টাইজিং
  • কো মার্কেটিং 

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) হচ্ছে ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক বৃদ্ধির একটি পদ্ধতি, যা কন্টেন্টের কোয়ালিটি এবং কোয়ান্টিটি উভয় বৃদ্ধির মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। 

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করা হয় সাধারণত- কনটেন্ট কে সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে শো করানোর জন্য। যাতে করে সেখান থেকে সরাসরি ট্রাফিক পাওয়া যায়। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?

এসইও সবার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে এটি যদি একবার ঠিক মত কাজ করে তাহলে ফ্রিতে ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আসতে থাকে অনেকদিন। মূলত সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজে আমাদের ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট প্রথম দিকে রাখার উদ্দেশ্যে এসইও করা হয়। আর গুগল থেকে বা অন্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে আসা ট্রাফিক গুলো নির্ভরযোগ্য এবং কার্যকরী। 

তবে এসইও করা খুব একটা সহজ নয়, এর জন্য অনেক গুলো স্ট্র্যাটেজি নিতে হয়। এর মধ্যে কয়েকটি হলো- 

একটি কি-ওয়ার্ড নির্ধারণ করা

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ করার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে একটি কি-ওয়ার্ড নির্ধারণ করা। কারণ কি-ওয়ার্ড মূলত একটি কন্টেন্টের মাঝে ইউজারদের এবং সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে যোগসূত্র সৃষ্টি করে থাকে। ভালো মানের কি-ওয়ার্ড নির্ধারণ করাটা প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ। অনেক সময় দেখা যায়, ভালো মানের কি-ওয়ার্ড পেলেও সেটি নিয়ে কাজ করা অনেক কঠিন হয়ে যায়, আগে থেকে অনেক স্ট্রং কম্পিটিটর থাকার কারণে। 

কি-ওয়ার্ড নির্ধারনের ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে গুগল অ্যাডস একাউন্ট। গুগল অ্যাডস একাউন্ট মূলত ফ্রি আর ফ্রি জিনিস সব সময় ভালো হয় না। যদিও আমি বলছি না গুগল এডস একাউন্টের রেজাল্ট ভালো নয়, এখানে অনেক ব্যবসা জড়িত থাকার কারণে তারা ফ্রিতে ভালো জিনিস অফার করে না। এজন্য একজন এসইও অপটিমাইজার কে কিছু পেইড টুলের সহায়তা নিতে হয়, যেমন- ahref, Moz, এবং SEMrush।  এই প্রিমিয়াম টুল গুলোর সাহায্যে খুব সহজ ভাবে ভালো মানের কি-ওয়ার্ড নির্ধারণ করা যায় এবং অন্যন্য কম্পিটিটর দের সাথে কম্পিটিশন কি রকম হবে তা পরিমাপ করা যায়।

একটা কি-ওয়ার্ড নির্ধারণ করতে হলে অনেক বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়। যেমন- লোকেশন, কি-ওয়ার্ডের ধরণ, সার্চ ভলিয়ম, সিপিসি, কেডি, এসডি, এসইআরপি ইত্যাদি। লোকেশন নির্ধারন করা লাগে কোন দেশের জন্য টার্গেট করে কন্টেন্ট লেখা হয়েছে তার সঠিক ব্যবহারের জন্য। কি-ওয়ার্ডের ধরন যেমন বাইং ইন্টেনশন নাকি ইনফরমেটিভ ইত্যাদি। এছাড়া সার্চ ভলিয়ম হচ্ছে- মান্থলি ঐ নির্দিষ্ট কি-ওয়ার্ডের জন্য কতটি সার্চ পড়ে প্রতি মাসে তার একটি হিসেব। 

সব মিলিয়ে এসইও শুরু করার ক্ষেত্রে প্রথমে একটি ভালো মানের কি-ওয়ার্ড নির্ধারণ করা বড় রকম চ্যালেঞ্জ। কারন কি-ওয়ার্ড ঠিক মত ম্যাচ করলে তারপরে যদি লোকজন ঐ কি-ওয়ার্ড সার্চ করে তাহলে আপনার কন্টেন্ট সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজে পাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।

কনটেন্ট তৈরি এবং অপটিমাইজেশন 

কি-ওয়ার্ড রিসার্চ শেষ করে কি-ওয়ার্ড নির্ধারণ করার পর এবার কাজ করতে হবে, কন্টেন্ট নিয়ে। কন্টেন্ট্কে রিসার্চ করা কি-ওয়ার্ড দ্বারা অপটিমাইজ করতে হবে। 

গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার উপায়

মূলত কন্টেন্ট অপটিমাইজ করার পদ্ধতিকে এসইও এর ভাষায় বলা হয় অন-পেইজ এসইও। যা মূলত কাজ করে ওয়েবসাইটকে সম্পূর্ন সার্চ ইঞ্জিনগুলো যেভাবে দেখতে চায়, ঐভাবে অপটিমাইজ করা। অন-পেইজ অপটিমাইজেশনের জন্য ভালো গাইড লাইন দিয়ে থাকে মজ ডট কম। তাদের চেকলিস্ট গুলো ফলো করলে ভালো রকম ধারণা পাওয়া যায় কন্টেন্ট অপটিমাইজেশনে। তবে সবার প্রথম প্রাধান্য দিতে হবে কন্টেন্টের কোয়ালিটিকে এরপর আসবে কোয়ান্টিটির বিষয়টি। 

কন্টেন্ট অপটিমাইজেশন এর জন্য সুন্দর হেডলাইন ব্যবহার করতে হবে, h1, h2, h3 ইত্যাদি ট্যাগ গুলোর সঠিক ব্যবহার করতে হবে। কন্টেন্ট ইউনিক হতে হবে। মেটা ডেসক্রিপশন ঠিকমত সাজাতে হবে, কি-ওয়ার্ডকে সঠিক যায়গায় প্লেসমেন্ট করতে হবে। এছাড়াও দেখতে হবে সার্চ ইঞ্জিন বট গুলো কন্টেন্ট এক্সেস করতে পারছে কিনা সঠিক ভাবে। 

শুধুমাত্র কন্টেন্ট ভালো হলে ভিজিটর আসবে এবং আপনার লিড জেনারেট করার জন্য যে ফর্ম দিবেন তা নির্দিধায় পূরণ করতে আগ্রহী হবে। তারপর প্রাধান্য দিতে হবে কন্টেন্টের কোয়ান্টিটিকে। 

অন-পেইজ এসইও এর কার্যক্রম শেষ করার পর পরবর্তী কাজ ইন্টার্নাল এবং এক্সটার্নাল লিংক সৃষ্টি করা। 

লিড ম্যাগনেট অফার করা

যখন সঠিক কি-ওয়ার্ড নির্ধারণ করবেন এবং কন্টেন্ট অপটিমাইজ করবেন, ভালো মানের ব্যাকলিংক ব্যবহার করবেন মোটামুটি অনপেইজ এসইও এবং অফপেইজ এসইও সঠিক ভাবে সম্পন্ন করার পর আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আশা শুরু করবে অর্গানিক উপায়ে। তাহলে লিড জেনারেশন এর কার্যক্রম শুরু হবে। 

“লিড ম্যাগনেট” বলতে বোঝানো হয়, প্রিমিয়াম মানের কন্টেন্ট গুলো গিভওয়ে দেওয়া। এটা অডিয়েন্স আকৃষ্ট করার সবচেয়ে ভালো উপায়। শুধুমাত্র ভালো মানের কিছু প্রিমিয়াম রিসোর্স ফ্রিতে দেওয়ার কারণে যদি অডিয়েন্সের লিড সংগ্রহ করা যায়, মার্কেটিং এর দিক থেকে এটি অনেক বড় প্রাপ্তি। কারণ এই লিড হতে পারে ভবিষ্যতে বড় রকম সেলের মাধ্যম।

ফাইভারে কাজ পাবার উপায়

অডিয়েন্সের দিক থেকে চিন্তা করলে বিষয়টি সম্পর্কে আরো ভালো ধারণা পাওয়া যায়। যেমন যদি প্রশ্ন করা হয়, আপনার ওয়েবপেইজ বা ল্যান্ডিং পেইজে কেন অডিয়েন্স প্রবেশ করবে এবং কেন ইনফর্মেশন শেয়ার করবে? এটার যদি ভালো উত্তর থাকে তাহলে আপনার লিড জেনারেশন প্রসেস সাকসেসফুল হবে। 

লিড ম্যাগনেটে শুধুমাত্র যে ওয়েবসাইট ওনার সুবিধা পেয়ে থাকে বিষয়টি এমনও নয়, পাঠকও শুধুমাত্র ইমেইল শেয়ারের মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট এবং প্রিমিয়াম জিনিস পেয়ে যায়। এক্ষেত্রে উভয়জন লাভবান হয়ে থাকে। দ্বিতীয় পর্বে আমরা আলোচনা করবো লিংকেডইন এডভার্টাইজিং (২) এবং কো-মার্কেটিং (৩) নিয়ে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।

No comments

Powered by Blogger.